হাওজা নিউজ এজেন্সি: রাসূলুল্লাহ ﷺ ইরশাদ করেছেন,
اَلنَّوْمُ عَلى سَبْعَةِ اَوْجُهٍ. نَوْمُ الْغَفْلَةِ، فَهُوَ الَّذى فى مَجْلِسِ الذِّكْرِ وَ نَوْمُ الشَّقاوَةِ، فَهُوَالَّذى وَقْتَ الصُّبْحِ وَ نَوْمُ الْعُقُوبَةِ، فَهُوَ النَّوْمُ الَّذى وَقْتَ الصَّلوةِ وَ نَوْمُ اللَّعْنَةِ فَهُوَ الَّذى بَعْدَ صَلوةِ الْفَجْرِ وَ نَوْمُ الرَّاحَةِ فَهُوَ النَّوْمُ عِنْدَ اسْتِواءِ النَّهارِ وَ نَوْمُ الرُّخْصَةِ فَهُوَ نَوْمٌ بَعْدَ الْعِشاءِ وَ نَوْمُ الْحَسْرَةِ فَهُوَ النَّوْمُ لَيْلَةَ الْجُمُعَةِ.
অর্থাৎ, ঘুম সাত ধরনের হতে পারে:
১️. গাফিলতির ঘুম: যিকির বা ইসলামী আলোচনা চলাকালীন সময়ে ঘুমানো। এটি মুমিনের জন্য ক্ষতিকর, কারণ ইবাদতের সময় মনোযোগ হারানো ধর্মীয় ক্ষতি ডেকে আনে।
২️. অভাগা বা দুঃখজনক ঘুম: ফজরের সময়ে (সূর্য ওঠার আগে) অলসতার কারণে ঘুমানো। এ ধরনের ঘুম অভাগা এবং আধ্যাত্মিক ক্ষতির প্রতীক।
৩️. শাস্তির ঘুম: নামাজের সময়ে ঘুমিয়ে পড়া। এটি সরাসরি শাস্তির কারণ হতে পারে এবং আল্লাহর নৈরাশ্য প্রকাশ করে।
৪️. অভিশাপ বা লানতের ঘুম: ফজরের নামাজের পর আবার ঘুমানো। এই ঘুমকে ইসলাম ধর্মে অনুকূলভাবে দেখা হয় না এবং এটি অলসতার প্রতীক।
৫️. আরামের ঘুম: দৈনন্দিন জীবনে দিনের মাঝামাঝি সময়ে স্বল্প বিশ্রাম নেওয়া। এটি দেহ ও মনের পুনরুজ্জীবনের জন্য প্রয়োজনীয় এবং স্বাস্থ্যকর।
৬️. রেহাই বা প্রশান্তির ঘুম: এশার নামাজের পর ঘুমানো। এটি শরীর ও আত্মার জন্য উপকারী, এবং মুমিনকে ইবাদতের জন্য প্রস্তুত করে।
৭️. হাসরত বা অনুতপ্তের ঘুম:
জুমার রাতের ঘুম (বৃহস্পতিবার রাত), যখন অযথা ঘুমানো ইবাদতের ক্ষতি করে। তবে সঠিক সময়ে বিশ্রাম নিলে এটি শরীর ও মনকে সতেজ করে।
শিক্ষণীয় দিক: ইসলামে ঘুম শুধুমাত্র দেহের বিশ্রামের জন্য নয়, বরং ইবাদতের সঙ্গে সম্পর্কিত। ঘুমের ধরন অনুযায়ী এর আধ্যাত্মিক গুরুত্ব ভিন্ন:
কিছু ঘুম আধ্যাত্মিক ক্ষতি ডেকে আনে, যেমন নামাজের সময় বা ফজরের পর অতিরিক্ত ঘুম।
কিছু ঘুম শরীর ও মনকে সতেজ রাখে, যা ইবাদতের জন্য সহায়ক।
কুরআনের আলোকে: আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেছেন: وَجَعَلْنَا نَوْمَكُمْ سُبَاتًا
“আমি তোমাদের ঘুমকে বিশ্রামের মাধ্যম করেছি।” [সুরা আন-নাবা, ৭৮:৯]
ঘুম মানুষের জীবনের অপরিহার্য অংশ। সঠিক সময়ে সঠিকভাবে ঘুমানো কল্যাণ বয়ে আনে, আর ইবাদতের ক্ষতি করে ঘুমানো আযাব, লানত ও অনুতাপের কারণ হতে পারে। একজন মুমিনের উচিত ঘুমকেও ইবাদতের অংশ হিসেবে গ্রহণ করা।
উৎস:
▫️মিজানুল হিকমা, হাদীস ১৬১৬
▫️ বিহারুল আনওয়ার, আল্লামা মাজলিসী, খণ্ড ৭৪, পৃ. ৭৩
লেখা: হুজ্জাতুল ইসলাম ওয়াল মুসলিমিন জনাব আলী নওয়াজ খান
আপনার কমেন্ট